জ্ঞান বিজ্ঞানের স্রোত ধারায় উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার প্রধান অবলম্বন হলো সুশিক্ষিত মানব সম্পদ। এ মূল্যবান মানব সম্পদ উন্নয়নে সন্দেহাতীত ভাবে কাজ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকমন্ডলি। তাই উন্নত মানব সম্পদ গড়ার লক্ষ্যে ও শিক্ষার আলো সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় “উত্তরা টাউন কলেজ” ।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্নে সকল স্তরের সার্বিক সহযোগিতাকারি ব্যক্তিবর্গের প্রতি, যাদের নিরলস পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় উত্তরা টাউন কলেজ বর্তমানে দেশের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে।
এ কলেজে রয়েছে দক্ষ, কর্মতৎপর ওবিদ্যানুরাগী গভর্নিং বডি, অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলি ও আধুনিক শিক্ষার সকল সুযোগ সুবিধা। কলেজটি সম্পূর্ণ রাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত। এখানে রয়েছে উচ্চ শিক্ষার প্রাথমিক সোপান উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণি, ৯ টি বিষয়ে অনার্স কোর্স, ডিগ্রি পাস কোর্স ও বিবিএ প্রফেশনাল কোর্স। মাস্টার্স কোর্স প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও স্নাতক পর্যায়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু আছে। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা কৃতিত্বের সাথে দেশ বিদেশে তাদের অবদান রেখে চলছে।
দেশপ্রেম, ন্যায়পরায়ণতা, মানবতাবোধ, যুক্তিবাদিতা ও অসাম্প্রদায়িক মনোভাব তৈরি করাই আমাদের প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। আলোকিত মানুষ তৈরির অভিপ্রায়ে তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর এই সমাজে প্রকৃত দেশ প্রেমিক আদর্শ নাগরিক তৈরিতে আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে নিরন্তর।
আজকের শিক্ষার্থীই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ এবং তারাই একদিন দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব প্রদান করবে। তাদেরকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত ও আলোকিত সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও উচ্চপদস্থ সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ঢাকা মহানগরীর অন্যতম প্রাণকেন্দ্র উত্তরা মডেল টাউনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে উত্তরা টাউন কলেজ। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে প্রায় ৪,৫০০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।
উত্তরা একাডেমিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। শিক্ষাদানের মহান ব্রতকে সামনে রেখে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন এবং রাখছেন তাঁদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
বিশ্বায়নের এ যুগে পরিবর্তনশীল পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য এবং বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তার গর্বিত অংশীদার উত্তরা টাউন কলেজ। এই প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষগুলো সকল ধরনের আধুনিক সুযোগ—সুবিধা সমৃদ্ধ। পরিচ্ছন্ন শ্রেণিকক্ষ, প্রজেক্টর, সিসিটিভি, কম্পিউটার ল্যাব ও অন্যান্য আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা শিক্ষার ডিজিটালাইজেশনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অবসর সময়ে পড়াশোনার সুবিধাসহ পত্রিকা ও পাঠ সহায়ক বই সমৃদ্ধ পাঠাগার রয়েছে। এ কলেজে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসেবে রয়েছে ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাব, ইনডোর গেমস, বার্ষিক ম্যাগাজিন, চিত্রাঙ্কন, সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, শিক্ষাসফর ইত্যাদি যা শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের উপযোগী করে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে একদল অত্যন্ত নিবেদিতপ্রাণ, অভিজ্ঞ, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, দক্ষ, মেধাবী ও চৌকস শিক্ষকমণ্ডলি দ্বারা পাঠ পরিকল্পনা অনুযায়ী এবং শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। অধ্যক্ষ হিসেবে আমি এই প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীকে প্রকৃত মানুষ, দেশপ্রেমিক ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যারা সমাজ ও দেশের উন্নতির জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমীন
১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বরেণ্য শিক্ষাবিদ এবং দেশের উচ্চপদস্থ শিক্ষানুরাগী সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে উত্তরা টাউন কলেজ প্রতিষ্ঠিত। কলেজটি উত্তরা একাডেমিক ফাউন্ডেশন কতৃর্ক প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত।
উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা নিয়ে কলেজটির যাত্রা শুরু হয়। ২০০২—২০০৩ শিক্ষাবর্ষে বিএ, বিএসএস, বিবিএস (পাস) কোর্স এবং ২০০৩—২০০৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনক্রমে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। বর্তমানে গণিত, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, অর্থনীতি, মার্কেটিং, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনাসহ মোট ৯টি বিষয়ে চার বছর মেয়াদী অনার্স কোর্স সফলভাবে পরিচালনার মাধ্যমে এ কলেজের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। এখানে ২০০৯—২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে চার বছর মেয়াদী বিশেষায়িত বিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্স চালু আছে। বিএসসি (পাস), কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিষয়ে অনার্স কোর্সসহ ৬টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালুকরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যা একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারই শুভ ইঙ্গিত বহন করে।
ঢাকা মহানগরীর পরিকল্পিত শহর উত্তরা মডেল টাউনের ৭নং সেক্টরের ভাড়া বাড়িতে যাত্রা শুরু করা কলেজটিতে বর্তমানে সর্বাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত দু’টি সুবিশাল বহুতল ভবনে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কলেজের ছাত্র—ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪,৫০০ (চার হাজার পাঁচশত) জন। কলেজের প্রধান ভবনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে উত্তরা মডেল টাউনের হাউজ বিল্ডিং সংলগ্ন ৬নং সেক্টরের ২নং রোডের ১নং ভবনে। কলেজের স্থায়ী ভবন ঢাকা মহানগরীর উত্তরখান থানার চাঁনপাড়ার মেডিকেল রোডে নিজস্ব জমির উপর ৬—তলা ভবন, খেলার মাঠ ও হোস্টেল সুবিধা নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। ছাত্র—ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা—কর্মচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কলেজের নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে।
বিবিএ (প্রফেশনাল) প্রোগ্রাম এর জন্য রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম ও সেমিনার রুম। কলেজের উভয় ভবনে ৬০টি কম্পিউটার সম্বলিত তিনটি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। ছাত্র—ছাত্রী, শিক্ষকদের জ্ঞানার্জনের সুবিধার্থে রয়েছে সুবিশাল কলেজ লাইব্রেরি। এছাড়া প্রত্যেকটি বিভাগে রয়েছে স্বতন্ত্র লাইব্রেরি। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি ও বিএসসি (অনার্স) শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্টসহ বিষয় ভিত্তিক ল্যাব। শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুযোগ—সুবিধাসহ কমনরুম রয়েছে।
কলেজের শিক্ষার্থীদের শারীরিক সুস্থতা ও মননশীলতা বিকাশের জন্য ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন প্রকার খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কুইজ প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও বার্ষিক শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়।
এ কলেজে ২০০৬ সাল থেকে ঢাকা বোর্ডের অধীন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, ২০১৩ সাল থেকে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধীন অনার্স কোর্সসমূহের পরীক্ষা এবং ২০২২ সাল থেকে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধীন বিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্সের পরীক্ষাসমূহের কেন্দ্র সুনামের সাথে পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া বিসিএস পরীক্ষাসহ বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষাও এ কলেজ কেন্দ্রে সুশৃংখলভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
একঝাঁক অভিজ্ঞ, তরুণ নিবেদিতপ্রাণ, মেধাবী ও চৌকষ শিক্ষক—শিক্ষিকার সযত্ন পাঠদান শিক্ষা কার্যক্রমকে ক্রমশ কাক্সিক্ষত মানে পৌঁছে দিচ্ছে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো—ভিসি, স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. মো. শাহাদত আলী এ কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সংস্থা ‘উত্তরা একাডেমিক ফাউন্ডেশন’ এর চেয়ারম্যান পদে আছেন প্রফেসর ড. তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, সাবেক অধ্যাপক, রসায়ন বিভাগ ও ডীন, বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাবেক প্রো—ভিসি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। অত্র কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা কমার্স কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক জনাব মো. নূরুল আলম ভূঁইয়া। তাঁদের দূরদর্শিতা, বলিষ্ঠ ও গতিশীল নেতৃত্বে কলেজটি কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যে এটি ঢাকা মহানগরীর একটি প্রথম শ্রেণির বিদ্যাপীঠ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
এ কলেজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সুপরিকল্পিত পাঠ্যক্রম, সহ-পাঠ্যক্রম কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক গুণাবলীর সর্বোচ্চ উৎকর্ষ সাধন যাতে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে দেশ ও জাতিকে উপযুক্ত নেতৃত্ব দিতে পারে।